বগুড়ায় মোটর মালিক গ্রুপের সহিংসতা: গ্রেফতার ১২

Passenger Voice    |    ০৭:০১ পিএম, ২০২১-০২-১০


বগুড়ায় মোটর মালিক গ্রুপের সহিংসতা: গ্রেফতার ১২

 

বগুড়ায় মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সহিংসতার ঘটনায় আওয়ামী লীগ-যুবলীগ, শ্রমিক লীগের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীর নামে তিনটি মামলা হয়েছে।

বুধবার বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবীর এ তথ্য জানান । এদিকে প্রশাসনের দাবী পূরনের আশ্বাসে মটর মালিক গ্রুপের এক পক্ষের ডাকা পরিবহন ধর্মঘট বুধবার দুপুরে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল চত্বরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে নতুন করে সহিংস ঘটনা ঘটেনি। তবে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ পর্যন্ত পুলিশ ১২ জন গ্রেফতার করেছে। তাদের কোন মামলায় কাকে গ্রেফতার দেখানো হবে তা বিকেল ৩টা পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, গত মঙ্গলবার চারমাথা আন্তঃজেলা বাসটার্মিনাল চত্বরে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় পুলিশ কনস্টেবল রমজান আলীকে ছুরিকাঘাতসহ সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে পুলিশ পরিদর্শক নান্নু খান বাদী হয়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক আহবায়ক মঞ্জুরুল আলম মোহনসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে আড়াই’শ নেতাকর্মীর নামে মামলা করেছেন।

অপরদিকে মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে তার অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এনে আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুরুল আলম মোহনকে প্রধান আসামি করে ৫২ জনের নাম উল্লেখ করে দেড় শতাধিক নেতাকর্মীর নামে আরেকটি মামলা করেছেন।

এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুরুল আলম মোহনের পক্ষে তার ছোট ভাই মশিউল আলম দীপন বাদী হয়ে পেট্রল পাম্প ভাঙচুর, বাস ভাঙচুরের অভিযোগে সদর উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিনুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে এক শতাধিক নেতাকর্মীর নামে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন।

এদিকে মোটর মালিক গ্রুপ অফিসে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের দায়ে মন্জুরুল আলম মোহনকে গ্রেফতারের দাবীতে বুধবার সকাল থেকে কর্মবিরতির ডাক দেয় পরিবহন মালিক শ্রমিক য়ৌথ কমিটি। এ কারণে বগুড়া চারমাথা আন্তঃজেলা বাস টর্মিনাল থেকে কোন গাড়ি ছাড়েনি। তবে দূরপাল্লাসহ বিভিন্ন রুটে যানবাহন চলাচল করেছে। দাবি নিয়ে জেলা পুলিশের সাথে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দাবি পূরণের আশ্বাসে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সভাপতি আব্দুল মান্নান আকন্দ। প্রত্যাহারের পর বিভিন্ন রুটের বাস চলাচল করছে।

অপরদিকে মন্জুরুল আলম মোহনের নামে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ফটিক অধিকারীসহ মোহনের সমর্থকরা। তারা অভিযোগ করেন, নিজেরা মোটর মালিক অফিস ভাংচুর করে অন্যের উপর দোষ চাপাচ্ছে। এ ছাড়া যুবলীগ নেতা আমিনুল বিএনপি নেতা ও পরিবহন ব্যবসায়ী মাহবুব আলম শাহীন হত্যা মামলার অন্যতম আসামী। তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।

উল্লেখ্য, মোটর মালিক গ্রুপের অফিসের দখল নিয়ে মঙ্গলবার সরকারি দলের দুই অংশের নেতাকর্মীদের তান্ডবে বগুড়া চারমাথায় কেন্দ্রিয় বাস টার্মিনাল রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ কারণে মহাসড়কে এক ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। সংঘর্ষচলাকালে দলীয় নেতাকর্মীদের হামলায় গোয়েন্দা পুলিশ সদস্য রমজান আলী ছুরিকাহত ও গাজী টিভির ক্যামেরাম্যান রাজু সহ কমপক্সে ১০ জন আহত হয়।